Monday, June 24, 2019

জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনাঃ-

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। কুরআন ও হাদিসের আলোকে জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরছি যেন এর ভয়াবহতা আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং নিজেরা সাবধান হয়ে যাই। আল্লাহ আমাদের জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

কুরআনের বর্ণনাঃ

হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর, যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদেরকে, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে করেছেন বিছানা, আসমানকে ছাদ এবং আসমান থেকে নাযিল করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর তাঁর মাধ্যমে উৎপন্ন করেছেন ফল-ফলাদি, তোমাদের জন্য রিয্কস্বরূপ। সুতরাং তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না। আর আমি আমার বান্দার উপর যা নাযিল করেছি, যদি তোমরা সে সম্পর্কে সন্দেহে থাক, তবে তোমরা তার মত একটি সূরা নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সাক্ষীসমূহকে ডাক; যদি তোমরা সত্যবাদী হও। অতএব যদি তোমরা তা না কর- আর কখনো তোমরা তা করবে না- তাহলে আগুনকে ভয় কর যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর, যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য। [সূরা আল-বাকারা/২, আয়াতঃ ২১-২৪]

দেখ, কেমন করে তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে। আর প্রকাশ্য পাপ হিসেবে এটিই যথেষ্ট। যারা কিতাবের জ্ঞানের একাংশ প্রদত্ত হয়েছে, সেই লোকদের প্রতি তুমি কি লক্ষ্য করনি, তারা অমূলক যাদু, প্রতিমা ও তাগূতের প্রতি বিশ্বাস করে এবং কাফিরদের সম্বন্ধে বলে যে তারা মু’মিনগণের তুলনায় অধিক সঠিক পথে রয়েছে। এরাই তারা যাদেরকে আল্লাহ লা‘নত করেছেন। আর আল্লাহ যাকে লা‘নত করেন তুমি কখনো তার কোন সাহায্যকারী পাবে না। [সূরা আন-নিসা/৪, আয়াতঃ৫০-৫২]

নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে প্রবেশ করাব আগুনে। যখনই তাদের চামড়াগুলো পুড়ে যাবে তখনই আমি তাদেরকে পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে যাতে তারা আস্বাদন করে আযাব। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [সূরা আন-নিসা/৪, আয়াতঃ৫৬]

হে বনী আদম, যদি তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে রাসূলগণ আসে যারা তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করবে, তবে যারা তাকওয়া অবলম্বন করবে এবং (আমল) সংশোধন করবে, তাদের উপর কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং তার ব্যাপারে অহঙ্কার করেছে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী। [সূরা আল-আরাফ/৭, আয়াতঃ৩৫-৩৬]

আল্লাহ বলবেন, ‘তোমাদের আগে জ্বিন ও মানুষের মধ্যে যারা জাহান্নামে প্রবেশ করেছে, তাদের মাঝে প্রবেশ কর।’ যখনই একটি দল প্রবেশ করবে, তখন তারা অন্যদলকে অভিসম্পাত করবে। অবশেষে সবাই যখন তার ভিতর একত্রিত হবে, তখন প্রত্যেকটি পরবর্তী দল আগের দল সম্পর্কে বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! ওরাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে, কাজেই ওদেরকে আগুনে দ্বিগুণ শাস্তি দাও।’ আল্লাহ বলবেন, ‘প্রত্যেকের শাস্তি দ্বিগুণ করা হয়েছে (নিজেরা পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য এবং অন্যদের পথভ্রষ্ট করার জন্য) কিন্তু তোমরা জান না।’ অতঃপর পূর্ববর্তী লোকেরা পরবর্তী লোকদেরকে বলবেঃ আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ শাস্তি ভোগ করতে থাক। নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং অহংকার বশতঃ তা থেকে ফিরে থাকে, তাদের জন্য আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হবেনা এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করবেনা, যতক্ষণ না সুচের ছিদ্র পথে উট প্রবেশ করে, এমনিভাবেই আমি অপরাধীদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। তাদের জন্য হবে জাহান্নামের (আগুনের) শয্যা এবং তাদের উপরের আচ্ছাদনও হবে (আগুনের তৈরী) চাদর, এমনিভাবেই আমি যালিমদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। [সূরা আল-আরাফ/৭, আয়াতঃ৩৮-৪১]

পক্ষান্তরে যারা মন্দ কাজ করে, তারা তাদের মন্দ কাজের শাস্তি পাবে কাজের অনুপাতে এবং অপমান তাদেরকে আচ্ছাদিত করবে, আল্লাহর (শাস্তি) হতে কেউই তাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না- যেন তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছাদিত করে দেয়া হয়েছে গাঢ় অন্ধকার রাত্রির টুকরো দিয়ে; তারা জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তার মধ্যে চিরকাল থাকবে। সেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে যারা শিরক করেছিল তাদেরকে বলব, ‘‘তোমরা এবং তোমরা যাদেরকে শরীক করেছিলে তারা নিজ নিজ জায়গায় থাক।’’ আমি তাদেরকে পরস্পর থেকে পৃথক করে দেব আর তারা যাদেরকে শরীক করেছিল তারা বলবে, ‘তোমরা তো আমাদের ‘ইবাদাত করতে না।’ এখন আল্লাহই আমাদের আর তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট, আমরা তোমাদের ‘ইবাদাতের ব্যাপারে সম্পূর্ণ বেখবর ছিলাম।’ [সূরা ইউনুস/১০, আয়াতঃ ২৭-২৯]

তাদের প্রত্যেকের জন্য পরিণামে জাহান্নাম রয়েছে এবং প্রত্যেককে পান করানো হবে গলিত পুঁজ। যা সে অতি কষ্টে গলধঃকরণ করবে এবং তা গলধঃকরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। সর্ব দিক হতে তার নিকট আসবে মৃত্যু যন্ত্রণা, কিন্তু তার মৃত্যু ঘটবেনা এবং সে কঠোর শাস্তি ভোগ করতেই থাকবে। যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের ‘আমালের দৃষ্টান্ত হল সেই ছাইয়ের মত যা ঝড়ের দিনে বাতাস প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়। নিজেদের উপার্জনের কিছুই তারা কাজে লাগাতে পারে না। এটাই ঘোর গুমরাহী। [সূরা ইবরাহীম/১৪, আয়াতঃ ১৬-১৮]

যেদিন এ পৃথিবী বদলে গিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে আর আসমানসমূহও (বদলে যাবে), আর মানুষ সমুস্থাপিত হবে এক ও অপ্রতিরোধ্য আল্লাহর সম্মুখে। সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে শৃঙ্খলে তাদের হাত পা শক্ত করে বাঁধা। তাদের পোশাক হবে আলকাতরার আর আগুন তাদের মুখমন্ডল আচ্ছন্ন করবে। (এটা করা হবে এজন্য) যাতে আল্লাহ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কৃতকর্মের প্রতিফল দিতে পারেন। আল্লাহ তো হিসাব গ্রহণে খুবই দ্রুতগতি। এটা মানুষদের জন্য একটা বার্তা যার দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে আর যাতে তারা জানতে পারে যে, তিনি এক ইলাহ আর যাতে বুদ্ধিমান মানুষেরা উপদেশ লাভ করে। [সূরা ইবরাহীম/১৪, আয়াতঃ ৪৮-৫২]

সে বলল, ‘হে আমার রব, যেহেতু আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তাই যমীনে আমি তাদের জন্য (পাপকে) শোভিত করব এবং নিশ্চয় তাদের সকলকে পথভ্রষ্ট করব’। কিন্তু তাদের মধ্যে আপনার বাছাই করা বান্দাহদের ছাড়া।’ তিনি বললেন- (আমার বাছাই করা বান্দারা যে পথে চলছে) এটাই আমার কাছে পৌঁছার সরল সোজা পথ। আমার প্রকৃত বান্দাহ্দের উপর তোমার কোন আধিপত্য চলবে না, তোমাকে যারা অনুসরণ করে সেই বিভ্রান্তরা ছাড়া। অবশ্যই তোর অনুসারীদের সবারই নির্ধারিত স্থান হবে জাহান্নাম। তার সাতটা দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্য তাদের মধ্যে শ্রেণী নির্দিষ্ট আছে।’ [সূরা আল-হিজর/১৫, আয়াতঃ৩৯-৪৪]

আল্লাহ যাদের পথ প্রদর্শন করেন তারাইতো সঠিক পথপ্রাপ্ত এবং যাদেরকে পথভ্রষ্ট করেন তাদের জন্য তুমি আল্লাহ ছাড়া কোন সাহায্যকারী পাবেনা। কিয়ামাতের দিন আমি তাদেরকে সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায়, বোবা অবস্থায় এবং বধির অবস্থায়। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম! যখনই তা স্তিমিত হবে আমি তখন তাদের জন্য আগুন বৃদ্ধি করে দিব। এটাই তাদের প্রতিফল, কারণ তারা আমার নিদর্শন অস্বীকার করেছিল ও বলেছিলঃ আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হলেও কি নতুন সৃষ্টি রূপে পুনরুত্থিত হব? তারা কি লক্ষ্য করে না যে আল্লাহ- যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন- তিনি তাদের মত মানুষ (পুনরায়) সৃষ্টি করতে সক্ষম। তিনি তাদের জন্য একটা সুনির্দিষ্ট সময় স্থির করেছেন, যাতে কোনই সন্দেহ নেই। কিন্তু যালিমরা অমান্য করে কেবল কুফরিই করল। [সূরা আল-ইসরা/১৭, আয়াতঃ৯৭-৯৯]

আর বলে দাও, ‘সত্য এসেছে তোমাদের রব্বের নিকট হতে, কাজেই যার ইচ্ছে ঈমান আনুক আর যার ইচ্ছে সত্যকে অস্বীকার করুক।’ আমি (অস্বীকারকারী) যালিমদের জন্য আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি যার লেলিহান শিখা তাদেরকে ঘিরে ফেলবে। তারা পানীয় চাইলে তাদেরকে গলিত শিশার ন্যায় পানি দেয়া হবে যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে, কতই না নিকৃষ্ট পানীয়! আর কতই না নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল! [সূরা আল-কাহফ/১৮, আয়াতঃ২৯]

যারা ঈমান এনেছে আর যারা ইয়াহূদী হয়েছে, আর যারা সাবিয়ী, নাসারা, অগ্নিপূজক ও মুশরিক, আল্লাহ কিয়ামাতের দিন এদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন (যে কারা সঠিক পথে আছে), কারণ আল্লাহ সব কিছুর প্রত্যক্ষদর্শী। তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদা করে যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, সূর্য, চাঁদ, তারকারাজী, পর্বতমালা, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু ও মানুষের মধ্যে অনেকে। আবার অনেকের উপর শাস্তি অবধারিত হয়ে আছে। আল্লাহ যাকে অপমানিত করেন তার সম্মানদাতা কেউ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। [সাজদাহ] এরা বিবাদের দু’টি পক্ষ, (মু’মিনরা একটি পক্ষ, আর সমস্ত কাফিররা আরেকটি পক্ষ) এরা এদের প্রতিপালক সম্বন্ধে বাদানুবাদ করে, অতঃপর যারা (তাদের প্রতিপালককে) অস্বীকার করে, তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আগুনের পোশাক, তাদের মাথার উপর ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি। যা দিয়ে তাদের পেটে যা আছে তা ও তাদের চামড়া গলিয়ে দেয়া হবে। উপরন্তু তাদের (শাস্তির) জন্য থাকবে লোহার মুগুর। যখনই তারা যন্ত্রণাকাতর হয়ে তা থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে, তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং বলা হবে, দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন কর। [সূরা আল-হজ্জ/২২, আয়াতঃ১৭-২২]

হাদিসের বর্ণনাঃ

সহীহ মুসলিমঃ
আনাস ইবনু মলিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহান্নামীদের মধ্যে যার শাস্তি সর্বাধিক লঘু হবে, আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেন, পৃথিবী এবং পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু যদি তোমার হয়ে যায়, তবে কি তুমি এ সব কিছু মুক্তিপণ স্বরূপ দান করে নিজেকে আযাব থেকে রক্ষা করবে? সে বলবে, হ্যাঁ, অবশ্যই। তখন তিনি বলবেন, তুমি আদমের পৃষ্ঠে থাকা অবস্থায় আমি তো তোমার নিকট এর থেকেও সহজ জিনিস দাবী করেছিলাম। তা হল, তুমি শিরক করবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছেনঃ তাহলে আমি তোমাকে জাহান্নামে দাখিল করবো না। কিন্তু তুমি (তা না মেনে) শিরকেই লিপ্ত হয়েছ। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৩/কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৪]

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জাহান্নামের তালিকাভুক্ত (উপযোগী) দুনিয়ায় সর্বাধিক সাচ্ছন্দ্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন আনা হবে। তারপর তাকে (জাহান্নামের) আগুনে একটি ডুব দিয়ে বলা হবে, হে আদম সন্তান! দুনিয়াতে আরাম-আয়েশ কখনো তুমি দেখেছো কি, কখনো তুমি সাচ্ছন্দ অবস্থায় দিনাতিপাত করেছো কি? সে বলবে, আল্লাহর কসম! হে আমার প্রতিপালক! না, কখনো দেখিনি। তারপর জান্নাতের তালিকাভুক্ত (উপযোগী) দুনিয়ায় সর্বাধিক খারাপ অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তিকে আনা হবে। তারপর তাকে জান্নাতে একবার অবগাহন করিয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে, হে আদম সন্তান! কখনো তুমি কষ্ট দেখেছো কি, কঠিন এবং ভয়াবহ অবস্থায় দিনাতিপাত করেছো কি? সে বলবে, আল্লাহর কসম, হে আমার প্রতিপালক! কখনো আমি কষ্টের সাথে দিনাতিপাত করিনি এবং দুঃখ কখনো দেখিনি। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৩/কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৯]

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ একটি নেকীর ক্ষেত্রেও আল্লাহ তাআলা কোন মুমিন বান্দার প্রতি যুলুম করবেন না। বরং তিনি এর বিনিময় দুনিয়াতে প্রদান করবেন এবং আখিরাতেও প্রদান করবেন। আর কাফির ব্যক্তি পার্থিব জগতে আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে নেক আমল করে এর বিনিময়ে তিনি তাকে জীবনোপকরণ প্রদান করেন। অবশেষে আখিরাতে প্রতিদান দেয়ার মত তার নিকট কোন নেকীই থাকবে না। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৩/কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩০]

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতকে বেষ্টন করে রাখা হয়েছে অপছন্দনীয় বস্তু দ্বারা এবং জাহান্নামকে বেষ্টন করে রাখা হয়েছে কামনা-বাসনা বস্তু দ্বারা। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৯]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের এ অগ্নি যা আদম সন্তানগণ প্রজ্জলিত করে তা জান্নামের আগুনের তাপমাত্রার সত্তর ভাগের একভাগ। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ। আল্লাহর কসম! এ আগুন যথেষ্ট ছিল। তিনি বললেনঃ (তবুও) সে আগুনকে এ আগুনের তুলনায় উনসত্তর গুন বেশী তাপমাত্রা সম্পন্ন করা হয়েছে। এর (উনসত্তরের) প্রতিটি গুন তার তাপের (দুনিয়ার আগুনের) সমমানের। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯০২]

সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, (জাহান্নামীদের) কাউকে তো অগ্নি তার উভয় টাখনু পর্যন্ত গ্রাস করে নিবে; আবার কাউকে তার কোমর পর্যন্ত গ্রাস করে নিবে এবং কাউকে তার গর্দান পর্যন্ত গ্রাস করে নিবে। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৬]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা জাহান্নাম ও জান্নাত বিতর্কে লিপ্ত হল। জাহান্নাম বলল, অহংকারী এবং প্রভাব প্রতিপত্তি সম্পন্ন লোক দ্বারা আমাকে প্রাধন্য দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলল, আমার কি হল, মানুষের মাঝে যারা দুর্বল, নীচু স্তরের এবং অক্ষম, তারাই আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। (এ কথা শুনে) আল্লাহ তাআলা জান্নাতকে বললেন, তুমি আমার রহমত, আমার বান্দাদের যার প্রতি ইচ্ছা আমি তোমার দ্বারা করুনা বর্ষণ করব। এরপর তিনি জাহান্নামকে বললেন, তুমি আমার আযাব, আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছা আমি তোমার দ্বারা শাস্তি দেব। তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই থাকবে ভরপুর হিস্যা। তবে (প্রথমে) জাহান্নাম পূর্ণ হবে না। তাই আল্লাহ তাআলা এতে তার পা রাখবেন। তখন জাহান্নাম বলবে, ব্যাস, ব্যাস। এ সময়ই জাহান্নাম পূর্ণ হবে এবং তার (জাহান্নামীদের) এক অংশ অপর অংশের সাথে প্রচণ্ড চাপ খাবে। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯১০]

মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ রুযযী (রহঃ) আবদুল ওয়াহহাব ইবন আতা (রহঃ) থেকে ... মহান আল্লাহর বাণীঃ (স্মরণ কর সে দিনটি) যেদিন আমি জাহান্নামকে বলব, তুমি (পেট) পূর্ণ হয়েছ কী এবং সে বলতে থাকবে, আরো আছে কি? يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلأْتِ وَتَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ‏ এর ব্যাখ্যায় আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ অব্যাহতভাবে (জাহান্নামীদেরকে) জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তবুও জাহান্নাম বলবে, আরো অধিক আছে কি? শেষ পর্যন্ত (আল্লাহ) রাব্বুল ইযযত এতে তার পা স্থাপন করবেন। তখন এর এক অংশ অপর অংশের সাথে মিলে গিয়ে সংকুচিত হয়ে আসবে এবং বলবে, তোমার ইজ্জত ও অনুগ্রহের কসম! ব্যস। আর সর্বদা জান্নাতের মধ্যে স্থান খালি থেকে যাবে। অবশেষে আল্লাহ এর জন্য অন্য মাখলুক পয়দা করবেন এবং খালি স্থানে তাদেরকে আবাসন দিবেন। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৬]

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তাআলা জান্নাতবাসীদেরকে জান্নাতে আর জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করানোর পর তাদের মধ্যখানে জনৈক ঘোষণাকারী দাঁড়িয়ে ঘোষণা করবে, হে জান্নাতবাসীগণ! (এখন) মৃত্যু নেই, হে জাহান্নামীরা! (এখন) মৃত্যু নেই। অনন্তকাল তোমরা স্ব-স্ব-স্থানেই থাকবে। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯২০]

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখন মৃত্যু কে আনা হবে এবং তাকে জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যখানে দাঁড় করিয়ে যবাহ করে দেয়া হবে। অতঃপর একজন ঘোষক ঘোষণা করবে, হে জান্নাতবাসীগণ! এখানে আর তোমাদের মৃত্যু নেই। অনুরূপভাবে জাহান্নামীদেরকেও বলা হবে, হে জাহান্নামীরা! আর তোমাদের মৃত্যু নেই। এতে জান্নাতীদের খুশীর সাথে আরো খুশী বৃদ্ধি পাবে এবং জাহান্নামীদের দুঃখের সাথে আরো দুঃখ সংযোজিত হবে। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯২১]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কাফিরদের দাঁত উহুদ পাহাড়ের সমতুল্য হবে এবং তাদের চামড়ার পুরত্ব হবে তিন দিনের (পথের দূরত্ব পর্যন্ত)। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯২২]

হারিসা ইবনু ওয়াহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমদেরকে জান্নাতবাসীর সম্পর্কে অবহিত করব? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেনঃ তারা হবে দুর্বল এবং নম্র স্বভাবের লোক। যারা আল্লাহর নামে শপথ করলে আল্লাহ তা পূরণ করেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে দোযখবাসীর সম্পর্কে অবহিত করব? সাহাবীগণ বললেনঃ হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বরলেন, তারা হবে অত্যাচারী, দাম্ভিক ও অহংকারী লোক। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৪]

সাঈদ ইবনুল মূসায়্যিব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “বাহীরা” তথা সে উষ্ট্রী, যা কোন দেবতার নামে মানত করে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়া হত। দেবতার সন্তুষ্টির জন্য তার দুধ খাওয়া নিষিদ্ধ হত। তাকে মানুষ দোহন করে না। সাইবা সেই উষ্ট্রী, যা কাফিররা তাদের দেবতার নামে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দিত। এর পিঠে কোন বোঝা বহন করা হতো না। ইবনু মূসায়্যিব (রাঃ) বলেছেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জাহান্নামের মধ্যে আমর ইবনু আমির খুযাঈকে দেখেছি, সে তার নাড়ী-ভুড়ি টেনে নিয়ে হাটছে। দেবদেবীর নামে সে-ই সর্বপ্রথম উট ছেড়ে ছিল। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৯]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুই প্রকার মানুষ জাহান্নামী হবে। আমি তাদেরকে দেখিনি। এক প্রকার ঐ সমস্ত মানুষ যাদের নিকট গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে। তারা এর দ্বারা লোকদের প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় প্রকার ঐ সমস্ত মহিলা, যারা বস্ত্র পরিহিতা কিন্তু উলঙ্গ, আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা। যাদের মাথার খোপা বুখতী উটের উঁচু কুঁজোর ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ এতো-এতো দূরত্বে থেকে পাওয়া যাবে। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩০]

আবূ গাসসান আল-মিসমাঈ, মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না ও মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ইয়ায ইবনু হিমার আল মুজাশিঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষণ রত অবস্থায় বললেনঃ শোন, আমার প্রতিপালক আজ আমাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা থেকে তোমাদেরকে এমন বিষয়ের শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি আমাকে আদেশ করেছেন, যে বিষয়ে তোমরা অজ্ঞ। তা হল এই যে, আমি আমার বান্দাদেরকে যে ধন-সম্পদ দিয়েছি তা পরিপূর্ণরূপে হালাল। আমি আমার সমস্ত বান্দাদেরকে একনিষ্ঠ (মুসলিম) হিসাবে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদের নিকট শয়তান এসে তাদেরকে দ্বীন হতে বিচ্যুত করে দেয়। আমি যে সমস্ত জিনিস তাদের জন্য হালাল করেছিলাম সে তা হারাম করে দেয়। অধিকন্তু সে তাদেরকে আমার সাথে এমন বিষয়ে শিরক করার জন্য নির্দেশ দিল, যে বিষয়ে আমি কোন সনদ পাঠাইনি।

আল্লাহ তাআলা পৃথিবীরবাসীদের প্রতি নযর করে কিতাবীদের কতিপয় লোক ব্যতীত আরব-আজম সকলকে অপছন্দ করেছেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমাকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে এবং তোমার দ্বারা অন্যদেরকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে আমি তোমাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছি এবং তোমার প্রতি আমি এমন কিতাব অবতীর্ণ করেছি যা পানি কখনো ধুয়ে-মুছে ফেলতে পারবে না। ঘুমন্ত ও জাগ্নত অবস্থায় তুমি তা পাঠ করবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কুরায়শ গোত্রের লোকদেরকে জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি তখন বললাম, হে আমার প্রতিপালক! আমি যদি এ কাজ করি তবে তারা তো আমার মাথা ভেঙ্গে রুটির ন্যায় টুকরা টুকরা করে ফেলবে। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ তারা যেমনিভাবে তোমাকে বহিস্কার করেছে ঠিক তুদ্রূপ তুমিও তাদেরকে বহিস্কার করে দাও। তুমি তাদের সাথে যুদ্ধ কর। আমি তোমাকে সাহায্য করব। ব্যয় কর (আল্লাহর পথে), তোমার জন্যও ব্যয় করা হবে। তুমি একটি বাহিনী প্রেরণ কর, আমি অনুরূপ পঞ্চ বাহিনী প্রেরণ করব। যারা তোমার আনুগত্য করে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে যারা তোমর বিরুদ্ধাচারণ করে তাদের সাথে লড়াই কর।

তিন প্রকার মানুষ জান্নাতী হবে। (এক প্রকার মানুষ) তারা, যারা রাষ্ট্রীয় কর্ণধার, ন্যায়পরায়ণ, সত্যবাদী এবং নেক কাজের তাওফীক লাভে ধন্য লোক। (দ্বিতীয়) তারা ঐ সমস্ত মানুষ, যারা দয়ালু এবং আত্নীয়-স্বজন ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি কোমলচিত্ত। (তৃতীয়) ঐ সমস্ত মানুষ, যারা পুত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী, যাঞ্চাকারী নয় এবং সন্তানাদি সম্পন্ন লোক।

অতঃপর তিনি বললেনঃ পাঁচ প্রকার মানুষ জাহান্নামী হবো (এক) এমন দুর্বল মানুষ, যাদের মাঝে (ভাল-মন্দ) পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই, যারা তোমাদের এমন তাবেদার যে, না তারা পরিবার-পরিজন চায়, না ধনৈশ্বর্য। (দুই) এমন খিয়নতকারী মানুষ, সাধারণ বিষয়েও যে খিয়ানত করে যার লোভ কারো নিকটই লুক্কায়িত নেই। (তিন) ঐ লোক, যে তোমার পরিবার-পরিজন এবং ধন-সম্পদের ব্যাপারে তোমার সাথে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা করে। (চার) কৃপণতা ও (পাঁচ) মিথ্যাবলার কথাও উল্লেখ করেছেন। আর বলেছেন 'শিনজীর' হল চরম অশ্লীলতাবাদী। তবে আবূ গাসসান (রহঃ) তার হাদীসের মধ্যে وَأَنْفِقْ فَسَنُنْفِقَ عَلَيْكَ কথাটি উল্লেখ করেননি। [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫৪/জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৩]

সূনান তিরমিজীঃ
আমর ইবন শু‘আয়ব তার পিতা তার পিতামহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন অহংকারীদিগকে মানুষের সূরতে পিপীলিকার ন্যায় একত্রিত করা হবে। সব দিক থেকে লাঞ্চনা তাদেরকে আচ্ছাদিত করে ফেলবে। জাহান্নামের বূলাছ নামীয় বন্দীখানায় তাদের হাকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কঠিন অগ্নি তাদের গ্রাস নিবে। জাহান্নামীদের পূতি গন্ধময় পূজ রক্ত ইত্যাদি তাদের পান করান হবে। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪০/কিয়ামত, হাদিস নম্বরঃ ২৪৯৪, হাদিসের মানঃ হাসান]


আবূ বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আখিরাতে শাস্তি সংরক্ষিত রাখার সাথে সাথে দুনিয়াতেও আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক শীঘ্র শাস্তি প্রদানের জন্য ব্যবিচার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার মত আর কোন গুনাহ নাই। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪০/কিয়ামত, হাদিস নম্বরঃ ২৫১৩, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন জাহান্নাম থেকে একটি গর্দান বের হবে। এর দু’টো চোখ থাকবে যে দু’টো দিয়ে সে দেখবে, দু’টো কান থাকবে যা দিয়ে সে শুনবে এবং একটি জিহবা থাকবে যা দিয়ে সে কথা বলবে। সে বলবেঃ তিন ব্যক্তির উপর আমি নিযুক্ত হয়েছি, দুর্বিনীত অবাধ্যাচারী; যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে ইলাহ্ বলে ডাকে এবং চিত্রকর। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৭৫, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কাফিরের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ গজ পুরু, তার মাড়ির দাঁত হবে উহূদ পাহাড়ের মত, জাহান্নামে তার উপবেশন স্থল হবে মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী দূরত্বের ন্যায়। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৭৮, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন কাফিরের মাড়ির দাঁত হবে উহূদ পাহাড়ের মত তার উরু হবে বায়দা পাহাড়ের মত আর জাহান্নামে তার আসনের জায়গাটি হবে তিন দিনের পথ (মদীনা থেকে) রাবাযা (দূরত্বের) এর অনুরূপ। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৭৯, হাদিসের মানঃ হাসান]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম আল্লাহ্ তা’আলার দরবারে অভিযোগ করে এবং বলে, আমার কতক অংশ আর কতককে গ্রাস করে নিচ্ছে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তার দুটো শ্বাসের ব্যবস্থা করেন। একটি শ্বাস শীতে আরেকটি শ্বাস গ্রীষ্মে। শীতের শ্বাস হল যামহারীর (শৈত্যপ্রবাহ) আর গ্রীষ্মের শ্বাস হল সামূম (লূ প্রবাহ)। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৯৩, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন) যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্-এর স্বীকার করে এবং যব পরিমাণ ঈমানও যার অন্তরে আছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস। যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্-এর স্বীকার করে এবং গমের দানা পরিমাণ ঈমানও যার অন্তরে আছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস। যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর স্বীকার করে এবং অণু পরিমাণ ঈমানও যার অন্তরে আছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৯৪, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম থেকে শেষ যে ব্যক্তিটি বের হবে আমি তাকে জানি। সেই ব্যক্তি তা থেকে নিতম্বের উপর ভর দিয়ে হেঁচড়িয়ে বের হবে। সে বলবঃ হে পরওয়ারদিগার! লোকেরা তো স্থান নিয়ে নিয়েছে?

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাকে বলা হবেঃ জান্নাতের দিকে যাও, জান্নাতে গিয়ে দাখিল হও। এরপর লোকটি সেখানে দাখিল হতে যাবে। সে দেখতে পাবে লোকেরা আবসসমূহ গ্রহণ করে নিয়েছে। সে ফিরে আসবে। বলবেঃ হে পরওয়ারদিগার, লোকেরা তো আবাস গ্রহণ করে নিয়েছে।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তাকে বলা হবে, যে কাল অতিবাহিত করে এসেছ তার কথা মনে পড়ে কি? সে বলবেঃ অবশ্যই। তাকে বলা হবেঃ তুমি (কি) আশা কর বল।

লোকটি তার আশা প্রকাশ করে বলতে থাকবে। তখন তাকে বলা হবেঃ যা যা আশা করেছ সবই তোমাকে দেওয়া হল। এর সঙ্গে আরো (দেওয়া গেল) দুনিয়ার দশগুণ। লোকটি বলবেঃ আপনিা রাজাধিরাজ হওয়া সত্ত্বেও আমার সঙ্গে উপহাস করছেন!

বর্ণনাকারী আব্দুল্লাহ ইবন মাস'উদ (রাঃ) বলেনঃ এখনে আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাসতে দেখলাম। এমনকি তাঁর দাঁত ভেসে উঠল। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৯৬, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোকটি সব শেষে জাহান্নাম থেকে বের হবে এবং সবার পরে জান্নাতে দাখিল হবে সেই লোকটিকে আমি অবশ্যই জানি। এক ব্যক্তিকে আনা হবে। আল্লাহ্ তা’আলা (ফেরেশতাদের) বলবেনঃ এর ছোট ছোট গুনাহর কথা জিজ্ঞাসা কর আর বড় বড় গুনাহগুলো লুকিয়ে রাখ। এরপর তাকে বলা হবেঃ অমুক অমুক দিনে অমুক অমুক গুনাহ্ করেছিলে? অমুক অমুক দিনে অমুক অমুক গুনাহ্ করেছিলে? রাবী বলেনঃ (সব স্বীকার করে নেওয়ার পর) তাকে বলা হবেঃ এক একটি বদীর স্থলে তোমাকে নেকী দেওয়া হবে। লোকটি বলবেঃ হে রব! আমি আরো (বদ) কাজ করেছিলাম। সেগুলো তো এখানে দেখছি না! বর্ণনাকারী বলেনঃ এ সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হেসে উঠতে দেখলাম। এমন কি তাঁর দাঁত পর্যন্ত ভেসে উঠল। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৯৭, হাদিসের মানঃ সহীহ]

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তাওহীদপন্থী কিছু লোককে (আমলের কুতাহীর কারণে) জাহান্নামে (সাময়িক) শাস্তি দেওয়া হবে। এমনকি তারা তাতে বিদগ্ধ অঙ্গার হয়ে যাবে। এরপর আল্লাহর তাদের উপর নেমে আসবে। ফলে তাদের বের করা হবে এবং জান্নাতের দরজায় পৌঁছে দেওয়া হবে। জান্নাতবাসীগণ তাদের উপর পানি ছিটাবেন। এতে তারা এমন ভাবে সতেজ হয়ে উঠবে যেমন শস্য-অংকুর স্রোতবাহিত পলিতে সতেজ হয়ে উঠে। তারপর তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৫৯৮, হাদিসের মানঃ সহীহ] 

ইমরান ইবন হুসায়ন (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার উম্মতের এক সম্প্রদায়কে আমার সুপারিশে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে। তাদের ’‘জাহান্নামীয়্যূন’’ বলে আখ্যায়িত করা হবে। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৬০১, হাদিসের মানঃ সহীহ]

ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতের দিকে আমি আগ্রহভরে তাকালাম, দরিদ্র জনদেরকেই আমি এর অধিকাংশ অধিবাসী বলে দেখতে পেলাম এবং জাহান্নামের দিকে তাকালাম। মহিলাগণকেই এর অধিকাংশ অধিকাংশ অধিবাসী বলে দেখতে পেলাম। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৬০৩, হাদিসের মানঃ সহীহ]

নু'মান ইবন বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নামবাসীদের মধ্যে সবচে' সহজতর শাস্তি হল সেই ব্যক্তির যার দুই পায়ের তালুর নীচে দুটো জ্বলন্ত অঙ্গার রেখে দেওয়া হবে আর সেই কারণে তার মাথার মগজ টগবগ করে ফুটতে থাকবে। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৬০৫, হাদিসের মানঃ সহীহ]

হারিছা ইবন ওয়াহব খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ আমি তোমাদেরকে জান্নাতবাসীদের সম্পর্কে খবর দিব? তারা হল, প্রত্যেক সেই ব্যক্তি যে দুর্বল বলে মনে করা হয় কিন্তু সে যদি আল্লাহর উপর কোন বিষয়ে কসম খায়, তবে আল্লাহ্ তা’আলা অবশ্যই তার কসম পূরণ করেন। শোন, জাহান্নামবাসী সম্পর্কে তোমাদের খবর দিব কি? তারা হল প্রত্যেক সেই ব্যক্তি যে কটুভাষী, কৃপণ ও অহঙ্কারী। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪২/জাহান্নামের বিবরণ, হাদিস নম্বরঃ ২৬০৬, হাদিসের মানঃ সহীহ]

আল-লুলু ওয়াল মারজানঃ
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্ক করে। জাহান্নাম বলে দাম্ভিক ও পরাক্রমশালীদের দ্বারা আমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলে, আমার কী হলো? আমাতে কেবল মাত্র দুর্বল এবং নিরীহ ব্যক্তিরাই প্রবেশ করছে। তখন আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলা জান্নাতকে বলবেন, তুমি আমার রহমত। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে আমি অনুগ্রহ করব। আর তিনি জাহান্নামকে বলবেন, তুমি হলে আযাব। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেব। জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে পূর্ণতা। তবে জাহান্নাম পূর্ণ হবে না যতক্ষণ না তিনি তাঁর পা তাতে রাখবেন। তখন সে বলবে, বাস, বাস, বাস। তখন জাহান্নাম পূর্ণ হয়ে যাবে এবং এর এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে মুড়িয়ে দেয়া হবে। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টির কারো প্রতি যুলম করবেন না। অবশ্য আল্লাহ্ তা'আলা জান্নাতের জন্য অন্য মাখলুক সৃষ্টি করবেন। [তাওহীদ পাবলিকেশন, গ্রন্থঃ আল-লুলু ওয়াল মারজান, অধ্যায়ঃ ৫১/জান্নাত, তার বিবরণ, আনন্দ-উপভোগ ও তার বাসিন্দা, হাদিস নম্বরঃ ১৮০৯, হাদিসের মানঃ সহিহ]

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে চলে যাবে, তখন মৃত্যুকে উপস্থিত করা হবে, এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হবে। এরপর তাকে যব্‌হ করে দেয়া হবে এবং একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা দিবে যে, হে জান্নাতীগণ! (এখন আর) কোন মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! (এখন আর কোন) মৃত্যু নেই। তখন জান্নাতীগণের আনন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর জাহান্নামীদের বিষন্নতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। [তাওহীদ পাবলিকেশন, গ্রন্থঃ আল-লুলু ওয়াল মারজান, অধ্যায়ঃ ৫১/জান্নাত, তার বিবরণ, আনন্দ-উপভোগ ও তার বাসিন্দা, হাদিস নম্বরঃ ১৮১২ হাদিসের মানঃ সহিহ]

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কাফিরের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণের সমান হবে। [তাওহীদ পাবলিকেশন, গ্রন্থঃ আল-লুলু ওয়াল মারজান, অধ্যায়ঃ ৫১/জান্নাত, তার বিবরণ, আনন্দ-উপভোগ ও তার বাসিন্দা, হাদিস নম্বরঃ ১৮১৩ হাদিসের মানঃ সহিহ]

আল্লাহ আমাদের জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি দেন। আমীন।

No comments:

Post a Comment

ঈমান

ঈমান সম্পর্কিত নিচের হাদিসগুলো মুসলিম মাত্রই জানা অত্যন্ত জরুরী। আসুন তাহলে শুরু করি - ঈমান ও ইসলামঃ আবূ খায়সামা যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ...